কিভাবে ডাটা ক্যাবল ছাড়া মোবাইল থেকে কম্পিউটারে ফাইল পাঠাবেন?

ডাটা ক্যাবল ছাড়া এন্ড্রোয়েড ও আইফোনের ফাইল কম্পিউটারে বা ল্যাপটপে কিভাবে ট্রান্সফার করবো?

কিভাবে ডাটা ক্যাবল ছাড়াই স্মার্টফোন বা মোবাইল থেকে ল্যাপটপ অথবা কম্পিউটারে ফাইল পাঠানো যায়?


ডাটা ক্যাবলের মাধ্যমে পিসির সাথে মোবাইল কানেক্ট করে বিভিন্ন তথ্য যেমন, গান, সিনেমা, ভিডিও, ছবি, ডকুমেন্ট ইত্যাদি আদান-প্রদান খুবই পুরাতন একটি পদ্ধতি। আধুনিক স্মার্টফোন আমাদের হাতে আসার আগেই ফিচারফোন ও প্রি-স্মার্টফোন যেমন নকিয়া সিম্বিয়ান, নকিয়া মিউজিক ফোন, ও অন্যান্ন ব্রাণ্ডের ক্যামেরা ওয়ালা ফোন যখন আমরা ব্যবহার করতাম তখন থেকেই ডাটা ক্যাবলের মাধ্যমে আমরা ফোন থেকে পিসি এবং পিসি থেকে ফোনে ডাটা ট্রান্সফার করতাম। ওই সকল ফিচারফোন এবং সেমি-স্মার্টফোন গুলোতে যদিও ইনফারেড ও ব্লুটুথ দ্বারা তারবিহীন পদ্ধতিতেও ডাটা আদান প্রদান করা যেতো তবে ডাটা ক্যাবলের তুলনায় ওগুলোর ট্রান্সফার স্পিড ছিলো খুবই স্লো।

আধুনিক স্মার্টফোনে মোবাইল থেকে ল্যাপটপে অথবা কম্পিউটারে ডাটা ক্যাবল ছাড়াও বিভিন্ন উপায়ে উচ্চগতিতে ফাইল পাঠানো যায়। নিম্মে প্রচলিত কিছু পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করা হলোঃ



১. ক্লাউড ফাইল স্টোরেজ এপ্লিকেশনের মাধ্যমে ট্রান্সফার:


ক্লাউড ফাইল স্টোরেজ/শেয়ারিং এপ্লিকেশনের মাধ্যমে ট্রান্সফার:

আপনি নিশ্চই গুগল ড্রাইভ, ড্রপ বক্স, ওয়ান ড্রাইভ, বক্স, মেগা  ইত্যাদি ক্লাউড ফাইল স্টোরেজের নাম শুনে থাকবেন। এই সব ক্লাউড ফাইল স্টোরেজের মাধ্যমে খুব সহজেই আপনি আপনার মোবাইল থেকে পিসিতে ফাইল ট্রান্সফার করতে পারবেন।

উদাহরন স্বরুপ; আপনার মোবাইলের গুগল ড্রাইভ এ ফাইল আপলোড করে একই জিমেইল দিয়ে পিসিতে drive.google.com এ গিয়ে সাইন-ইন করে আপনার ফাইলটি পিসিতে ডাউনলোড করতে পারবেন। পিসি থেকেও একই পদ্ধতিতে ফাইল গুগল ড্রাইভে আপলোড করে মোবাইলে ডাউনলোড করতে পারবেন। এক্ষেত্রে মোনে রাখবেন আপনি মোবাইলে যদি ওয়াই-ফাই ব্যবহার না করে মোবাইল ডাটা ব্যবহার করে থাকেন তাহলে ফাইলের সাইজ অনুযায়ী ডাউনলোড ও আপলোড উভয় ক্ষেত্রেই সমপরিমান ডাটা খরচ হবে। ফাইল কত দ্রুত আপলোড এবং ডাউনলোড হবে তা নির্ভর করবে আপনার মোবাইল অপারেটর বা ইন্টারনেটের স্পিডের উপর। 


২. ব্লুটুথের মাধ্যমে ফাইল ট্রান্সফারঃ


ব্লুটুথের মাধ্যমে ফাইল ট্রান্সফারঃ


আপনি চাইলে ব্লুটুথ দিয়েও ফাইল শেয়ার করতে পারবেন। সাধারনত ল্যাপটপে বিল্ড ইন বুলুটুথ থাকে। যদি না থাকে বা যারা ডেস্কটপ ব্যবহার করেন তারা বাজার থেকে মোটামুটি সর্বনিম্ন ১০০ টাকায় ব্লুটুথ ডাংগল কিনে সেটা ইউএসবি পোর্টে লাগিয়ে ব্লুটুথের মাধ্যমে ফাইল শেয়ার করতে পারেন। 


এটা খুবই সহজ পদ্ধতি কিন্তু এটার অসুবিধা হলো ফাইল এর সাইজ বেশি হলে সময়ও বেশ প্রয়োজন হয়। ছোট সাইজের ফাইল যেমন ছবি, এমপিথ্রি ফরম্যাটের গান, ওয়ার্ড, এক্সেল, পিডিএফ ডকুমেন্ট, ছোট সাইজের মোবাইল এপ ইত্যাদি ট্রান্সফারের জন্য ব্লুটুথ ট্রান্সফার পদ্ধতি বেশ কার্যকরী।


৩. ল্যান/ওয়াই-ফাই/ওয়াই-ফাই ডিরেক্ট ফাইল ট্রান্সফারঃ


ল্যান/ওয়াই-ফাই/ওয়াই-ফাই ডিরেক্ট ফাইল ট্রান্সফারঃ


আপনার পিসিতে ওয়াই-ফাই থাকলে বা আপনার বাসায় যদি রাউটার থাকে এবং আপনার মোবাইল ও কম্পিউটার/ল্যাপটপ যদি একই রাউটারের অধিনে সংযুক্ত থাকে তাহলে আপনি ডাটা ক্যাবল ছাড়া বিভিন্ন সফটওয়্যারের মাধ্যমে ফাইল শেয়ার করতে পারবেন।


ধরুন আপনার বাসার ডেস্কটপ কম্পিউটার রাউটার থেকে ক্যাবলের মাধ্যমে ল্যান পোর্টে সংযুক্ত আছে, এবং আপনার মোবাইল ফোনটি ওয়াই-ফাইয়ের মাধ্যমে একই রাউটারে সংযুক্ত আছে। এক্ষেত্রে আপনি আপনার মোবাইলে Share It বা Send Anywhere এর মত এপ ডাউনলোড করে পিসিতেও সেইম সফটওয়্যার ইন্সটল করে বা ঐ সব সফটওয়্যারের ওয়েব ভার্ষন ব্রাউজারে ওপেন করে ফোন ও পিসি কানেক্ট করে নিতে পারবেন এবং খুব দ্রুত গতিতে সর্বোচ্চ 100 Mbps স্পিডে ফাইল আদান প্রদান করতে পারবেন।

আপনার ল্যাপটপ/ ডেস্কটপে বিল্ট ইন ওয়াই-ফাই না থাকলে বাজার থেকে ওয়াই-ফাই ডংগল কিনে ব্যবহার করতে পারেন। বাজারে Tp Link, TOTO Link, Tenda সহ আরও বিভিন্ন ব্রান্ডের ডংগল পাওয়া যায়, যার মূল্য মডেল ভেদে ৭০০-৮০০ টাকার মত।

এ পদ্ধতির সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো অনেক বড় ফাইল শেয়ার করতে সময় তুলনামুলক কম লাগে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ডাটা ক্যাবলের চেয়েও অনেক দ্রুত গতিতে ফাইল ট্রান্সফার হয়।


৪. কার্ড রিডার/পেন ড্রাইভের মাধ্যমে ফাইল ট্রান্সফারঃ


কার্ড রিডার/পেন ড্রাইভের মাধ্যমে ফাইল ট্রান্সফারঃ


কার্ড রিডারের মাধ্যমে ফাইল ট্রান্সফার পদ্ধতি হয়ত ইতোমধ্যে আপনার জানা আছে, ডাটা ক্যাবল ট্রান্সফারের সাথে সাথে আমরা কার্ড রিডার দিয়েও অনেক ফাইল ট্রান্সফার করেছি। মোবাইলের মেমোরি কার্ড খুলে কার্ড রিডারে লাগিয়ে, সেই কার্ড রিডার কম্পিউটারের ইউ এস বি পোর্টে কানেক্ট করে ফাইল কপি পেস্ট ই হলো কার্ড রিডার ফাইল ট্রান্সফারের কাজ।

বর্তমান সময়ের আধুনিক স্মার্টফোনে দেখা যায় অতিরিক্ত মেমোরি কার্ড লাগানোর ব্যবস্থাই থাকে না আবার যেগুলোতে থাকে তাতে দেখা যায় মোবাইল থেকে মেমোরি খুলে আবার লাগাতে হয় যেটা খুবই ঝামেলার কাজ।

তবে এক্ষেত্রে পেন ড্রাইভের মাধ্যমে ফাইল ট্রান্সফারে ঝামেলা অনেকাংশে কম। আপনার মোবাইল ফোন যদি ওটিজি সাপোর্টেড হয়  তাহলে মোবাইলভেদে মাইক্রো ইউ এস বি, বা টাইপ সি ইউ এস বি ডংগল দিয়ে টাইপ এ পেনড্রাইভের সাথে লাগিয়ে মোবাইলে ফাইল ট্রান্সফার করা যায়। বাজারে এসব ডংগল বা কনভার্টার কিনতে পাওয়া যায়, কোয়ালিটি ভেদে দাম ২০ টাকা থেকে শুরু করে ২০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। এছাড়াও মোবাইলের পোর্ট টাইপ অনুযায়ী ওটিজি পেন ড্রাইভ কিনতেও পাওয়া যায়। যেমনঃ Type C OTG Pen Drive



ট্যাগস

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* দয়া করে স্পামিং করবেন না। সকল কমেন্টই এডমিনদ্বারা রিভিউ করা হয়ে থাকে.